এবার কোন সাংবাদিক দম্পতি নয়, শিল্পপতি নয় সাবেক সেনা কর্মকর্তা নয়,
সাধারণ কোন মানুষ ও নয় খোদ রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস ও মালিবাগ এসবি
অফিসের মধ্যস্থানে রাজধানীর চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশের এসবি ইন্সপেক্টর
মাহফুজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী স্বপ্নাকে খুন করা হয়েছে । শুক্রবার সন্ধায়
পল্টন থানার পুলিশ ওই বাসা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করেছে। ঘটনাস্থলে
উপস্থিত পল্টন থানার ওসি গোলাম সারোয়ার গণমাধ্যমকে জানান, দুই-তিন দিন আগে
দুর্বৃত্তরা ছুরিঘাতে হত্যা করা হয়েছে। তবে, হত্যার কারণ সম্পর্কে এখনো
কিছু জানা যায়নি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে পুলিশের নাকের ডগায় ২-৩ দিন আগে
পুলিশ দম্পতি নৃশংস ভাবে খুন হলো আর তিনদিন পর তাদের লাশের খবর পেলো পল্টন
থানা পুলিশ। যেখানে অন ডিউটিতে ২৪ ঘন্টা পুলিশ তার দায়িত্ব পালন করে সেখানে
এই নৃশংস হত্যাকান্ডের কোন ক্লু কিংবা কোন সংবাদ আগে কেন পাওযা যায়নি?
পুলিশের একজন দায়িত্বশীল এসবি অফিসার তার তিনদিন কোন হদিস নেই। মাহফুজুর
রহমানের ‘ও’ লেভেলে পড়া মেয়ে ঐশী ও গৃহকর্মীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
ছেলেটি পুলিশের হেফাজতে আছে। সে ব্যাপারেও গণমাধ্যমে কোন খবর বের হয় নি।
তার ও তার স্ত্রীর নৃশংস মৃত্যুই তাকে খবরের শিরোনাম করেদিলো। বিভিন্ন
স্যাটেলাইট চ্যানেলের স্ক্রলে বার বার এই হত্যাকান্ডের খবর প্রচার হচ্ছে।
বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়াতে হত্যাকান্ডের খবর ইতিমধ্য সংবাদ শিরোনামে প্রচারিত
হচ্ছে আর বলা হচ্ছে বিস্তারিত আসছে।
কি আসছে? সাগর রুনির মতো
তার শিশু ছেলে এতিম হলো, আর কিছু দিন পর হয়তো ও লেভেলে পড়ুয়া মেয়ে ঐশী' ও
গৃহ পরিচারিকার ছিন্ন ভিন্ন লাশ পাওযা যাবে কোন ডাষ্টবিন বা ডোবা পুকুরে।
তাদের পিতা-মাতা প্রিয় সন্তান হারিয়ে নির্বাক হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে অঝোরে
কাদবে আর কাদবে এবং চিৎকার করে বলবে মাহফুজ-স্বপ্না তোরা কই? ইতিমধ্যে
হয়তো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশের আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার সহ
গুরুত্বপূর্ন শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌছে গেছে। বিভিন্ন
ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া ও প্রিন্টিং, অনলাইন মিডিয়ার কর্মীরা ব্যাস্ত হয়ে
পড়েছে সর্বশেষ খবর জানার জন্য।
মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হয়তো
বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার স্বভাব সুলভ চরিত্র নিয়ে বলবেন। খুনীরা যেখানেই
থাকুকনা কেন আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদের খুজে বের করা হবে। ঠিক সাগর-রুনি
খুন হওয়ার পর পরেই সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বর্তমান টেলি মন্ত্রী সাহারা
খাতুন একই সংলাপ দিয়েছিলেন। নতুন কোন তথ্য বা আশার বানি শুনতে পাবে না খুন
হওয়া এসবি অফিসার মাহফুজ ও স্বপ্নার পিতা মাতা। তাদের কান্না ছাড়া আর কোন
সুসংবাদ নেই । কিন্তু কেন? এভাবে একের পর এক খুন হবে আর খুনীরা নিরাপদে
পালিয়ে যাবে, আর প্রশাসন বলবে সবোর্চ্চ চেষ্টা চলছে!!
এই খুনের
সংবাদ যিনি সবচেয়ে সাহস করে নির্ভিক চিত্তে লিখতে পারতো সেই সাহসী সম্পাদক
প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান এখন কারাগারে। সে কোন খুন করেনি। তার পরেও তার
মামলার শেষ নেই। যে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিতো আরেকজন সাহসী মানবাধিকার
কর্মী, অধিকারের সেক্রেটারী আদিলুর রহমান খানও এখন কারাগারে। কিন্তু
সাগর-রুনির হত্যাকারীরা এখনো বাইরে ঘোরা-ফেরা করছে।
গুম হওয়া এম
ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলম সহ অসংখ্য নেতাকর্মী ও ব্যবসায়ীদের যারা গুম করেছে
তারাও বাইরে। এদের প্রত্যেককে যদি খুজে বের করা যেতো এবং তাদের বিরুদ্ধে
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করা যেতো তাবে হয়তো এভাবে এসবি অফিসার মাহফুজ ও তার
স্ত্রী স্বপ্নার নৃশংস খুনের খবর শোনা লাগতো না।
যে স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রী এখনো সাগর-রুনির হত্যাকারীদের খুজে বের করতে পারে নি, এম ইলিয়াস
আলী ও চৌধুরী আলমকে তাদের পরিবারের মাঝে ফিরিয়ে দিতে পারে নি, সেই
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এখনো কোন মুখ নিয়ে ক্ষমতায় বসে আছেন? এই খুনের ঘটনার
সাথে সাথে আগে তার পদত্যাগ করা উচিত ছিলো। তার সঙ্গে পদত্যাগ করা উচিত ছিলো
ডিএমপি পুলিশ কমিশনারের।
Comments
Post a Comment