ডেটলাইন 'জানুয়ারি টু মার্চ' প্রস্তুত দু'পক্ষ



মাঠে-ময়দানে আন্দোলন-হরতাল এখনো শুরু হয়নি, কিন্তু জাতীয় রাজনীতিতে ভেতরে ভেতরে অস্থিরতা দ্রুত বাড়ছে। বিরোধী ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে আলোচনা-সমঝোতার হাজারো আহ্বান জানানো হলেও তা আমলে আনেনি সরকারি দল। বিরোধীদলের হুমকি-ধমকিকে গুরুত্ব না দিয়ে বরং এর বিপরীতে নানান টিটকিরি শুনিয়েছে। তাই অবশেষে বিরোধীদলকে সরকার পতনের আন্দোলনের দিকেই অগ্রসর হতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর মতে, চূড়ান্ত আন্দোলনের সার্বিক প্রস্তুতিও এখন সম্পন্ন প্রায়। বাকি শুধু ঘোষণা। তবে যতোটা জানা গেছে, এবার আর গতানুগতিক পদ্ধতিতে ঘোষণা দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে না। তাৎক্ষণিকভাবে এবং যথাসম্ভব খুব কম সময়ের মধ্যে গণবিস্ফোরণ সৃষ্টি করে সরকারের পতন ঘটানোই লক্ষ। এবারের আন্দোলনের গতি-প্রকৃতিই হবে ভিন্ন। এরকমের বিশেষ এক পরিকল্পনা মাথায় রেখে এগুচ্ছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধীদল। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, বিরোধীদল টার্গেট করেছে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়টাকে। এ সময়ের মধ্যে যে কোনো মূল্যে সরকারের পতন ঘটানো হবে বলে তারা নিশ্চিত করে বলছেন।

এদিকে সরকারও কিন্তু বসে নেই। প্রথমদিকে বিরোধীদলের হুমকি-ধমকিকে পাত্তা না দিলেও এখন ভেতরে ভেতরে সরকারের মধ্যে টেনশন বাড়ছে। এর অনেকগুলো কারণও আছে। বর্তমান পরিস্থিতি তাদের জন্য নাজুক বলে মনে করছে। তাই সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে, আবারো বিরোধীদলের আন্দোলনকে ঠেকিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার পরিকল্পনা আঁকতে। এবারের আন্দোলন ঠেকিয়ে দিতে পারলে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নিরাপদ থাকা যাবে, এমনটিই ভাবছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। কিন্তু, কীভাবে এ আন্দোলনের মোকাবেলা করবেন সেই পথ খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। কারণ, এবারের আন্দোলনের গতি-প্রকৃতিই ভিন্ন। বিরোধীদল এখন পর্যন্ত মাঠে-ময়দানে নামেনি যে, তাদেরকে নানান অজুহাতে গ্রেফতার করা যাবে। সমস্যার বিষয় হচ্ছে, বিরোধীদলের প্রস্তুতিটা কেমন, কী প্রকারে এটি ঠেকানো যাবে সেটিই বুঝে উঠতে পারছেন না। তবে তাই বলে বসে নেই। নানান রকমের উপায় পন্থা নিয়ে কাজ করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। শুধু বিরোধীদলের আন্দোলনের হুমকিই নয়, সরকারের অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যাও এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিদেশি চাপ ও অসহযোগিতা।

পারবে কী?

৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ বিশ্লেষকরা এই সময়টাকে বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে বিবেচনা করলেও তার আগেই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর)বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে বকশীবাজারে বিএনপি ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ২৭ ডিসেম্বরেও গাজীপুরে খালেদা জিয়ার জনসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই সমাবেশ প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ। ৩ ও ৫  জানুয়ারিও রাজধানীতে সমাবেশ করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি।

এতে বোঝা যাচ্ছে বিরোধীদল  টার্গেট অনুযায়ী কাজ শুরু করে দিয়েছে। তবে এ সময়ে কী ঘটবে তা কেউ বলতে পারছেন না। ৫ জানুয়ারিকে সরকার ও সরকারি দল গণতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করবে বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে। বিরোধীদল এখনো কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেনি। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিবসটিকে কালো দিবস হিসেবে পালন এবং এ উপলক্ষে ঢাকায় ব্যাপক শো-ডাউনের ব্যাপারে। ৫ জানুয়ারির এ কর্মসূচিতে সরকার বাধা দিলে পরবর্তীতে লাগাতার চূড়ান্ত কর্মসূচির কথা ভাবা হচ্ছে।

অবশ্য অনেকেরই প্রশ্ন, বিএনপি কী পারবে এবার কিছু একটা দেখাতে? এমনকি ২০ দলীয় জোটের শুভাকাক্সক্ষীরাও কেউ কেউ আন্দোলনের সফলতার ব্যাপারে সন্দিহান। তারা বুঝে উঠতে পারছেন না, কীভাবে বিএনপি এতো অল্প সময়ে সরকার পতনের মতো শক্তি অর্জন করলো। অবশ্য, বিএনপির শীর্ষ নেতারাসহ অধিকাংশ নেতা-ই এ মুহূর্তে বেশ আস্থাশীল। তারা দৃঢ়ভাবে মনে করেন, এবার সফল হবেন। কেউ কেউ নিশ্চিত করে এও বলছেন, এ সরকারের আয়ু আর এক থেকে দেড় মাস আছে। যদিও এখন পর্যন্ত এর তেমন কোনো আলামত দেখাতে পারেনি তারা।

২০১৩ সালের অক্টোবর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় তিন মাস লাগাতার আন্দোলন হয়েছে। এই দীর্ঘ আন্দোলনে আহত, নিহত ও গ্রেফতার অতীতের সকল রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলো। দেশের অনেক অঞ্চল ছিলো সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তারপরও বিরোধীদল সফলতা ঘরে আনতে ব্যর্থ হয়েছে শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকায় কিছু করতে না পারার কারণে। রাজধানী ঢাকায় আন্দোলনের ব্যর্থতা সম্পর্কে একেক জনের মূল্যায়ন একেক রকমের। একদিকে বিরোধীদল বিশেষ করে বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতা, অন্যদিকে সরকারি দল বা সরকারের প্রস্তুতি ছিলো সর্বোচ্চ পর্যায়ের। সরকারি বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে যারা কট্টর আওয়ামী লীগপন্থি, সারাদেশ থেকে এদের বাছাই করে এনে ঢাকায় জড়ো করা হয়েছিলো। এদের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিলো কড়া। ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিলো সীমাহীন। ‘দেখামাত্র গুলি’র সুযোগ দেওয়া হয়েছিলো। ফলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার অজুহাতে যখন তখন যে কাউকে হত্যা করার মতো স্বাধীনতা তারা পেয়ে গিয়েছিলো। সেই স্বাধীনতাকে তারা নিজেদের আখের গোছানোর কাজেও ব্যবহার করেছে। এ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিলো বিরোধীদলের জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচির অজুহাতে। বর্তমানে বিরোধীদলের সে রকমের কোনো কর্মসূচি নেই। তাই সেই অজুহাতও পাওয়া যাচ্ছে না।

বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অর্থাৎ র‌্যাব-পুলিশের মানবাধিকার লঙ্ঘনকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অঙ্গন চরমভাবে সোচ্চার। সংশ্লিষ্টদের মতে, এখনই সতর্ক না হলে যে কোনো সময় আন্তর্জাতিক মহল একে কেন্দ্র করে কঠিন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তাছাড়া এ বাহিনীগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং সমন্বয়হীনতাও এখন চরমে। সবকিছু মিলিয়ে সরকারের মূল ঢাল হিসেবে এতোদিন যাদের ধরা হতো সেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীরই অবস্থা এখন বেশ নাজুক।

নির্বাচনের প্রস্তুতি

বিরোধীদলের আন্দোলন ঠেকানোর পাশাপাশি ভেতরে ভেতরে সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নামক প্রহসনে উৎরে যাবার পর আওয়ামী লীগ ধরেই নিয়েছিলো আগামী ৪১ সাল পর্যন্ত তাদেরকে আর কেউ হটাতে পারবে না। মধ্যবর্তী নির্বাচনের তো প্রশ্নই আসে না। এমনকি আগামী ২০১৯ সালের নির্ধারিত (৫ জানুয়ারির নির্বাচনের হিসেবমতো) নির্বাচনকেও তারা ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সময় হিসেবে বিবেচনা করছে না। নির্বাচনের আগে যদিও বলছিলো, এটি নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। এরপর স্বল্প সময়, সর্বোচ্চ ১ বছরের মধ্যে আরেকটি নির্বাচনের আয়োজন করা হবে- এমন কথা বলা হয়েছিলো। নির্বাচন করিয়ে নেওয়ার পর পরই তারা সেই অবস্থান থেকে সরে যায়।

এভাবে পরিকল্পনা আঁটে, ২০২১ সাল অর্থাৎ স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন করবে তারা ক্ষমতায় থেকেই। শুধু তাই নয়, এরপর রয়েছে ভিশন ৪১। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং সেই সময় পর্যন্ত তারা ক্ষমতায় থাকবে- ভিশনটা এমন।

আওয়ামী লীগের এসব বক্তব্যের পেছনে দু’টি দিক কাজ করেছে। এক, তারা ধরেই নিয়েছিলো নির্বাচন পূর্ববর্তী গত ডিসেম্বর-জানুয়ারির লাগাতার আন্দোলন যেহেতু সফল করতে পারেনি, তাই ভবিষ্যতে বিএনপির পক্ষে বড় কোনো আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। শুধু জামায়াতকে বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্ন রাখলেই চলবে। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বপ্ন দেখেছিলো।

কিন্তু, একটি বছরও পার হতে পারেনি, এখনই আওয়ামী লীগকে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা ভাবতে হচ্ছে। এখনই সবকিছু ওলট-পালট হয়ে যাবার মতো অবস্থা।

যদিও বাইরে কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগ নেতারা একটা কথা শুরু থেকেই বেশ জোরেশোরে প্রচার করতে চাইছিলেন যে, বিজেপি সরকারের সঙ্গে কংগ্রেস সরকারের চেয়েও সম্পর্ক বেশি ঘনিষ্ঠ হবে। ভারত আওয়ামী লীগ ছাড়া কাউকেই বন্ধু বলে ভাবতে পারবে না। কিন্তু, তাদের এ প্রচারণা কোনো কাজে আসছে না। 

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিনন্দনের জবাবে শুরুতেই বলেছেন, ইউ গো ফর এ গুড ইলেকশন। এরপর সুষমা স্বরাজের বাংলাদেশ সফরসহ নানাভাবে ভারত এটা বুঝিয়ে দিয়েছে যে, তারা এখানে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা চায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, এ ব্যাপারে ভারতের সাফ কথা হলো- আওয়ামী লীগ বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তারা অপছন্দ করে না। তবে সবকিছুর আগে এদেশে তারা জনগণের সরকার দেখতে চায়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনবোধে ভারত সহযোগিতা করতেও রাজি আছে।

নির্বাচন না দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারা যায় কিনা এজন্য নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে দেখা হয়েছিলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান, আমেরিকা, ইউরোপসহ বিশ্ব সফরের তোড়জোড় শুরু করেছিলেন। কিন্তু, কোথাও থেকে ভালো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। কেউ সরাসরি বলে দিয়েছে, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ও নতুন করে নির্বাচিত হয়ে আসার জন্য, জনগণের সরকার গঠনের জন্য। আবার কেউ পরোক্ষভাবে আকার-ঈঙ্গিতে বুঝিয়েছে।

সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ৫ জানুয়ারি যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়নি এটা কারো ব্যাখ্যা করে বলার দরকার হচ্ছে না। সরকারই প্রমাণ করে দিয়েছে ইতিমধ্যে। প্রথমত, ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩ আসনে নির্বাচন না হওয়া। দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টার বক্তব্য।

অবশেষে তাই সরকার নির্বাচনের ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে। তবে কোনোভাবেই এ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটকে অংশগ্রহণ করতে দিতে চায় না সরকার। আগের মতো জাতীয় পার্টি এবং এর সঙ্গে ছোটখাটো আরো কিছু রাজনৈতিক দলকে সামনে রেখে নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায়। প্রয়োজনবোধে জামায়াতকেও সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করতে চায়।

যতোটা জানা গেছে, সরকারের তরফ থেকেই এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে, জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেবে। জামায়াতকে শক্তিশালী বিরোধীদল হিসেবে দাঁড় করাতে চায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু, বাস্তবে যা একেবারেই অসম্ভব বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

প্রচারণা হলো, আমান আযমীর নেতৃত্বে জামায়াতের তরুণ নেতৃত্ব গড়ে উঠছে। এ নেতৃত্বকে তুলে আনতে চায় আওয়ামী লীগই। আর এ কারণেই নাকি জামায়াতের বয়স্ক নেতাদের একে একে ফাঁসির মঞ্চে পাঠানো হচ্ছে। এতে নাকি জামায়াতের তরুণ নেতৃত্বেরই সমর্থন রয়েছে। এতে দু’টি উদ্দেশ্য সফল হবে। এক, আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো। দুই, পুরাতন নেতৃত্ব সাফ, নতুন নেতৃত্বের জন্য জায়গা সৃষ্টি। ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক এতে মূল ভূমিকা পালন করছেন। নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে এসব খবর নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বরং জামায়াত নেতারা এটাকে নিছক প্রচারণা বলে আখ্যায়িত করছেন।

খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানো ও বিএনপিতে ভাঙ্গন পরিকল্পনা

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাকে গুছিয়ে আনা হয়েছে। বাদীর জবানবন্ধী নেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ, এ আদালতের বিচারকও পরিবর্তন হয়েছে। যদিও বিএনপির অনাস্থা এবং হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক পরিবর্তন হয়েছে তবুও মনে করা হচ্ছে, এই পরিবর্তনটা বিএনপির বিপক্ষে যেতে পারে। সরকারের তরফে চেষ্টা চলছে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির। হয়তো শিগগিরই এ মামলা রায়ের পর্যায়ে চলে যাবে।

রাজনৈতিক মহলে এমনটাই ধরে নেওয়া হচ্ছে, এ মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হতে পারে। সেক্ষেত্রে তাকে গ্রেফতার এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার এবং বিএনপিতে ভাঙ্গন সৃষ্টির পরিকল্পনা কয়েক মাস আগেই নেওয়া হয়েছিলো। তাতে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে এ আশংকায় গ্রেফতার করা হয়নি। কিন্তু, এখন যতোই দিন যাচ্ছে সরকার সেদিকেই এগুচ্ছে। সরকারের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, ২০১৩ সালের ২৮ ডিসেম্বরের মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচি ভন্ডুল করে দেওয়া হয়েছিলো বেগম খালেদা জিয়ার চলাচলের ওপর ব্যারিকেড সৃষ্টি এবং তাকে অঘোষিতভাবে গৃহে অন্তরীণ রেখে। এখনো সেই একই পন্থায় বিএনপির সকল কর্মসূচি ঠেকিয়ে দেয়া সম্ভব। বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভয় পাবে এবং দমে যাবে বলে তারা মনে করেন।

এদিকে বিএনপিতে ভাঙন সৃষ্টির পরিকল্পনা চলছিলো বেশ কিছুদিন ধরে। কিন্তু, এটি হালে পানি পাচ্ছিলো না। অবশেষে এখন আবার জোরেশোরে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পরিকল্পনাটি এমন যে, বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে নেওয়ার পর প্যারালাল নেতা এবং প্যারালাল বিএনপি দাঁড় করানো হবে। সেই অনুগত বিএনপিকে নিয়ে নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।

জানা গেছে, ইতিমধ্যে বিএনপি নেতাদের অনেকের সঙ্গে সরকারের এজেন্টদের কথা হয়েছে। কিছু নেতাকে তারা ম্যানেজ করতে সক্ষম হয়েছেন বলেও নিশ্চিত করেছেন। তবে এসব নেতার অধিকাংশই দীর্ঘদিন ধরে লাইম লাইটে নেই। কেউ কেউ রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পর্যায়ে।

Comments

Popular posts from this blog

মনীষীদের বাণী- উক্তি

পেপ্যাল ভেরীফাই হয়নি তাই বলে কি ডোমেইন-হোস্টিং কেনা বন্ধ থাকবে? জানুন আনভেরীফায়েড পেপ্যাল দিয়ে ডোমেইন ও হোস্টিং কেনা যায় কোথা থেকে

বিসিএস পছন্দর ক্ষেত্রে প্রথম প্রশাসন কেন? দেখুন কোন ক্যাডারের পদোন্নতি কেমনভাবে হয় বা কোথায় থেকে কোথায় পোস্টিং