ব্লাটার স্বৈরাচারী, তোপ ম্যারাডোনার

ফুটবলই তার ধ্যাণ-জ্ঞান, তার জীবন। এবার সেই প্রাণের খেলা ফুটবলের আন্তর্জাতিক সংগঠন ফিফা প্রধান সেপ ব্লাটারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন আর্জেন্তিনার মহাতারকা দিয়েগো ম্যারাডোনা।

ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় একটি নিবন্ধে প্রাক্তন এই ফুটবল তারকা শানিত ভাষায় ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন ব্লাটারকে। ৭৯ বছরের সুইস নাগরিক ব্লাটারকে স্বৈরাচারী তকমা দিতেও পিছপা হননি ম্যারাডোনা। ফিফা-র প্রেসিডেন্ট পদে পঞ্চমবারের জন্য নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টা করছেন ব্লাটার। তার এই চেষ্টাকে সম্পূর্ণ অসম্ভব বলেও মন্তব্য করেছেন ম্যারাডোনা। উল্লেখ্য, এর আগে অন্য কোনো ব্যক্তিই ফিফা-র প্রেসিডেন্টের পদে পঞ্চমবারের জন্য বসেননি।

১৯৯৮-এ ফিফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন ব্লাটার। এবার ওই পদে তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী জর্ডানের আলি বিন আলি হুসেন। কেননা, ইতিমধ্যেই অপর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী লুইস ফিগো ও মাইকেল ভ্যান প্র্যাগ সরে দাঁড়িয়েছেন।



নিজের জমানায় বারবারই সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন ব্লাটার। এবারের নির্বাচনে ব্লাটারের জয়ের সম্ভাবনায় রীতিমতো মর্মাহত ম্যারাডোনা।তিনি লিখেছেন, ব্লাটারের আমলে ফিফা এমনই দুর্নীতির আখড়া হয়ে উঠেছে, যা তার মতো অন্যান্য ফুটবল প্রেমীদের কাছেও অত্যন্ত দুঃখের,লজ্জার এবং অসম্মানের।

তার মতে, কেউই খোলাখুলি ব্লাটারকে পছন্দ করেননা। এরপরও অনেকে ভাবছেন, ব্লাটারই জিতবেন। কেন? ২০১৫-তে পঞ্চমবারের জন্য ব্লাটারের জয়ী হওয়াটা সম্পূর্ণ অবাস্তব।

ম্যারাডোনা আরও লিখেছেন, সম্প্রতি ব্লাটার ফুটবলে বর্ণবিদ্বেষের সমস্যা মেটানো ও মহিলাদের খেলার উন্নয়নের কথা জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে ম্যারাডোনার প্রশ্ন, গত চারটি মেয়াদে এজন্য কেন কিছু করলেন না ব্লাটার।

ফুটবলের ঈশ্বর ম্যারাডোনা জানিয়েছেন, তিনি তার এই সফল কেরিয়ার এবং এত মানুষের সমর্থনের জন্য খুবই গর্বিত। এজন্য তার দেশ-বিদেশের অনুরাগী ও সমর্থকদের কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু যে খেলাটি তার প্রাণের সঙ্গে মিশে রয়েছে, তার প্রধান কমিটিই এবং প্রেসিডেন্টই স্বয়ং দুর্নীতির মধ্যে ডুবে রয়েছে। তাই এই লেখা লিখতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

তিনি লিখেছেন, ফুটবল এমনই একটি খেলা, যা সমস্ত বিশ্বকে একসুতোয় গেঁথে দেয়। কিন্তু শেষ কয়েক দশকে ফুটবলে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে, যাতে মোটেই ফুটবলের ভাল কিছু হয়নি। এরজন্য মূলত ফিফা-কেই দায়ী করেছেন ম্যারাডোনা। তার বক্তব্য, ফুটবলের গভর্নিং বডি ‘ফিফা’ একটি দুর্নীতির ক্রীড়াভূমিতে পরিণত হয়েছে।

তিনি তার লেখায় বলেছেন, তিনি ব্লাটারকে ব্যঙ্গ করে ‘দ্য ম্যান অফ আইস’ বলেন। তার প্রধান কারণ, ব্লাটারের মধ্যে অনুপ্রেরণা ও আবেগের অভাব। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন ব্লাটার যদি বিশ্ব ফুটবলের একজন প্রধান ব্যক্তি হন, তাহলে ফুটবল যে খুবই দুর্দশার মধ্যে রয়েছে একথা বলাই বাহুল্য।

তিনি আরও বলেছেন, এর আগে সংবাদমাধ্যমে এক দশক ধরে ব্লাটারের দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি ফিফার বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগও এনেছেন।

তিনি ব্লাটারকে কটাক্ষ করে বলেছেন ব্লাটার যে সমস্ত কাজ করেছেন তাতে তার জেলে থাকা উচিত। তিনি আরও বলেছেন, ব্লাটারকে যদি প্রশ্ন করা হয় তিনি তার শেষ চার মেয়াদকালে কী করলেন, তবে উত্তর এটাই হবে যে তিনি তার পকেটটি বেশ সমৃদ্ধশালী করে নিয়েছেন।

তিনি যদি সত্যিই একজন সৎ মানুষ হতেন তবে ফিফার আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত হতে দিতেন।

ম্যারাডোনার আরও অভিযোগ, ব্লাটারের এক ঘনিষ্ঠ ‘ফিফা’র অফিস থেকে সবকিছু চুরি করে নেওয়া সত্ত্বেও ব্লাটার জানিয়েছেন, তিনি এব্যাপারে কিছুই জানেননা।ব্লাটারের এই দাবিকে হাস্যকর বলেও মন্তব্য করেছেন ম্যারাডোনা।

‘ফিফা’র বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ফুটবলকেই ক্ষতবিক্ষত করছে বলে তার লেখায় জানিয়েছেন ম্যারাডোনা।

‘ফিফা’র পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে এক তরুণ সৃজনশীল ব্যক্তির নেতৃত্বই যথাযথ হবে বলে মত ম্যারাডোনার। যে কিনা নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে সমৃদ্ধ করবে ফুটবল দুনিয়াকে। তিনি ব্লাটারকে আক্রমণ করে আরও বলেছেন, কেন আমরা মুখ বুজে এই দুর্নীতি সহ্য করে যাব? আমরা মাফিয়া কালচার চাই না, চাই ফুটবল সংস্কৃতি। তাই এবার এর পরিবর্তন চাই আমরা।


https://www.youtube.com/watch?v=whbz442gHQc

Comments

Popular posts from this blog

মনীষীদের বাণী- উক্তি

পেপ্যাল ভেরীফাই হয়নি তাই বলে কি ডোমেইন-হোস্টিং কেনা বন্ধ থাকবে? জানুন আনভেরীফায়েড পেপ্যাল দিয়ে ডোমেইন ও হোস্টিং কেনা যায় কোথা থেকে

বিসিএস পছন্দর ক্ষেত্রে প্রথম প্রশাসন কেন? দেখুন কোন ক্যাডারের পদোন্নতি কেমনভাবে হয় বা কোথায় থেকে কোথায় পোস্টিং