প্রশাসন বনাম বিশেষায়িত বিভাগঃ প্রসঙ্গ বাংলাদেশ


প্রশাসনের কেন্দ্র বিন্দু সচিবালয়। সচিবালয় থেকেই সরকারের যাবতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহন, নীতিপ্রনয়ন, সম্পদ আহরন, বৈদেশিক সম্পর্ক রক্ষা এবং এসব নীতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী মাঠ পর্যায়ের বিশেষায়িত বিভিন্ন বিভাগ যেমনঃ শিক্ষা বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ বিভাগ, কৃষি বিভাগ ও অন্যান্য বিভাগের কার্যক্রম মনিটর করা হয়। মন্ত্রনালয়/সচিবালয় হলো নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থা (Regulating Body)।

সচিবালয়ে প্রশাসনিক সর্বোচ্চ পদ সচিব।শিক্ষা, স্বাস্থ্য কিংবা গনপূর্ত মন্ত্রনালয়ের সচিব পদেবিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের লোক কেন পদায়িত হবেন এ নিয়ে প্রায়শই পত্র পত্রিকায় ইতিবাচক ও নেতিবাচক অনেক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জনৈক ব্যক্তির একটি পোষ্টকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হতে দেখা গেছে। প্রচলিত ব্যবস্থার বিপক্ষে যারা কথা বলেন তাদের যুক্তি হলো আমলারা শিক্ষা, স্বাস্থ্য,, কৃষি, প্রকেৌশল এসবের কি বোঝে। এসব তো Technical বিষয়। সুতরাং মন্ত্রনালয়ে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের লোককেই নিয়োগ দিতে হবে। অর্থ্যাৎ শিক্ষক হবেন শিক্ষা সচিব, ডাক্তার হবেন স্বাস্থ্য সচিব, প্রকেৌশলী হবে সড়ক ও জনপথের সচিব ইত্যাদি ইত্যাদি।

এ পক্ষের মতাধারীদের আরেকটি যুক্তি হলোবাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে একই পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে প্রশাসন ক্যাডারের লোক সচিব পর্যন্ত পদোন্নতি পান কিন্তু অন্যান্য ক্যাডারের ক্ষেত্রে সচিব হওয়ার কোন সুযোগ না থাকায় সংবিধান স্বীকৃত সমতার নীতি অর্থ্যাৎ ২৯ অনুচ্ছেদে লঙ্ঘিত হয়েছে।

উপসচিব পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা প্রশাসন ক্যাডার ৭৫% এবং অন্যান্য সকল ক্যাডার ২৫% ব্যবস্থারও তারা বিরোধিতা করেন, এমনকি সংক্ষুদ্ধ হয়ে খাদ্য ও কর ক্যাডারের কয়েকজন কর্মকর্তা প্রতিকার চেয়ে ভিন্ন ভিন্ন রীট মামলা দায়ের করেন যার নং ৩৯৩,৩৯৪,১৭০৭, ১৭০৮, ২২৩৭/২০০১। ২০০২ সালে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রায় রীটকারীদের পক্ষে যায়। পরবর্তীতে সরকারপক্ষ Civil appeal nos 294-98 of 2003 দায়ের করলে দীর্ঘ পর্যালোচনা করে ২৪ মে, ২০১০ সালে মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের মাননীয় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বেফুল বেঞ্চ হাইকোর্ট বিভাগের রায় রদ ও রহিত (set-aside)করে।

মহামান্য সুপ্রীমকোর্ট যে সব বিবেচনায় হাইকোর্ট বিভাগের ১৩-০২-২০০২ তারিখের রায়টি রদ ও রহিত করেন তার মধ্যেই নিহিত আছে নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলির উত্তরঃ

১। কেন সকল মন্ত্রনালয়ের সচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যই পদায়িত হবেন।
২। পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা কেন যৌক্তিক।
৩। কেন কোটা ব্যবস্থায় সমতার নীতি লঙ্ঘিত হয় নি।

মাঠ প্রশাসনের বাস্তবতা ও উল্লিখিত আপিল মামলার ৭৬ পৃষ্ঠার আদেশে মহামান্য বিচারপতি মহোদয়গনের পর্যবেক্ষন নিচে তুলা ধরা হলোঃ

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যদের এন্ট্রি পোস্ট সহকারী কমিশনার/সহকারী সচিব। এই পদের স্বীকৃত পদ সোপান হলো সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সিনিয়র সহকারী সচিব, উপসচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব। অপরাপর ক্যাডারের পদ সোপানে (hierarchy)তে কোথাও উপসচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদ নাই। অর্থ্যাৎ পদ সোপান মেনেই তাঁরা পছন্দক্রম ঠিক করেছেন এবং পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে চাকুরীতে যোগদান করেছেন। সুতরাং পরবর্তীতে উপসচিব পুলে আত্মীকরন (merge)হওয়া ছাড়া সচিবালয়ে পদায়নের কোন সুযোগ তাদের নাই।

মন্ত্রনালয় /সচিবালয়ে কারিগরী কোন বিষয় নাই। নিয়োগ, বদলী, পদোন্নতি, রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির আলোকে সিদ্ধান্ত গ্রহন, নীতিমালা প্রনয়ন, বাজেট প্রনয়ন, ক্রয় বিক্রয়, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, মাঠ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা, উন্নয়ন কাজের তদারকি, আন্তঃমন্ত্রনালয় সম্পর্ক রক্ষা, মন্ত্রনালয় সংশ্লিষ্ট আইনের খসড়া প্রণয়ন করে থাকে। এগুলোর সাথে বিশেষায়িত জ্ঞানের কোন সম্পর্ক নাই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য কিংবা মন্ত্রনালেয়ের দৈনন্দিন প্রশাসনিক এসব কাজের সাথে শিক্ষক, ডাক্তার কিংবা প্রকৌশলীর কারিগরী জ্ঞান কোনভাবেই সম্পর্কযুক্ত নয়। বরং প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরাই এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের অধিকারী, কারন চাকুরীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা উপরিউল্লিখিত কাজগুলোর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

সহকারী কমিশনারগন যোগদানের শুরু থেকেই জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসাবে জেলা পর্যায়ের সকল নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত। অনেক বিভাগের পদোন্নতির সাথে জেলা প্রশাসক জড়িত। সরকার নতুন কোন বিষয়ে আইন প্রনয়ন কিংবা কোন আইন, নীতিমালা সংশোধন করতে জেলা প্রশাসকের মতামত নেন।

মাঠ পর্যায়ের সচিবালয় হলো জেলা প্রশাসন সেহেতু অন্যান্য সকল বিভাগের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমেকাজ করার/কাজ করিয়ে নেয়ার অভিজ্ঞতা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের আছে। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, জননিরাপত্তা বিধান প্রক্রিয়ার সাথে জেলা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতার কারনে বাংলাদেশে প্রচলিত আইন সম্পর্কে সম্যক ধারনা প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যদেরই আছে। সর্বোপরি সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সাথে যোগাযোগ প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যদের থাকায় তাদের চিন্তা ভাবনার ব্যপ্তি ও সামগ্রীকতা লক্ষ্য করা যায় যা মন্ত্রনালয় ও আন্ত মন্ত্রনালয় কর্মকান্ড পরিচালনায় খুবই জরুরী। প্রশাসনিক কাজের জন্য প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা পদায়নই যৌক্তিক।

মন্ত্রনালয়/সচিবালয়ে যদি সংশ্লিষ্ট ক্যাডার কর্মকর্তা পদায়ন করা হয় তাহলে মাঠ পর্যায়ে তাদের সমন্বয়কারী কে হবে। মাঠ পর্যায় থেকে শুরু করে মন্ত্রনালয় পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ক্যাডার কর্মকর্তার পদায়ন হলে সমন্বয় অসম্ভব। কারন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুলিশ, প্রকৌশল সবাই তো স্বতন্ত্র্য ক্যাডার। কে কার সভাপতিত্বে সভা করবে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অপর বিভাগের সাহায্যের প্রয়োজন হলে কিভাবে নিবে? রাষ্ট্রের যেসকল কর্ম প্রক্রিয়ায় সকল বিভাগ জড়িত যেমনঃ দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নির্বাচন, সেগুলো কার নেতৃত্বে হবে। বিশেষায়িত জ্ঞানের প্রয়োজন মাঠ পর্যায়ে/ বাস্তবায়নপর্যায়ে, সিদ্ধান্তগ্রহন পর্যায়ে যে বিশেষায়িত মতামত প্রয়োজন তা Technical Committee এর মাধ্যমে নেয়া হয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত যা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গনতান্ত্রিক দেশ সেখানেSpecialisedকোন ক্যাডারকে মন্ত্রনালয়ে পদায়ন করা হয় না। পাকিস্তানেও বিশেষায়িত কোন ক্যাডারকে মন্ত্রনালয়ে পদায়ন করা হয় না। আমাদের উপমহাদেশে প্রশাসন ক্যাডারের উৎপত্তিই সচিবালয়কে কেন্দ্র করে। ব্রিটিশ ভারতে ব্রিটিশ রাজ্যের সাথে যোগাযোগ রক্ষার্থে যারা লেখালেখি করত তাদের বলা হতো Writer। Writer রা যেখানে বসে লেখালেখি করত তার নাম ছিল Writers Building যা এখনও কলিকাতা সরকারের সচিবালয়। ঐতিহাসিক এ প্রেক্ষাপট আমাদের স্বরন করিয়ে দেয় সচিবালয়ে বিশেষায়িত ক্যাডারের কর্মকর্তার পদায়নের কোন সুযোগ নাই।

মহামান্য সুপ্রীমকোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের রায় রদ ও রহিত করার পূর্বে বৃটিশ ও পাকিস্তান আমলে civil service এর ইতিহাস পর্যালোচনা করে রায়ের ২৪ নং পৃষ্ঠায় মন্তব্য করেন” তদানিন্তন পাকিস্তানের প্রাথমিক সময় হইতেই উচ্চতর পদ সমূহের জন্য কোটা পদ্ধতি বিদ্যমান, কেন্দ্রিয় বা প্রাদেশিক অন্য কোন সার্ভিসের কোন সদস্যকে superior প্রশাসনিক পদে সাধারনভাবে নিয়োগ বা পদায়নের কোন সুযোগ ছিল না”

কেন্দ্রিয় বা প্রদেশিক প্রশাসনিকক্যাডার ব্যতিরেকে কেন্দ্রে ও প্রদেশগুলিতে বহুসংখ্যক Functional Service ও Specialist Service ছিল, কিন্তু কখনোই কোন superiorপ্রশাসনিক পদে অন্তর্ভূক্তির সুযোগ ছিল না। উপসচিব পদটি Superior Post এর অন্তর্ভূক্ত ছিল।

‍‍‍‍‍‍‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌“রায়ের ৬৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে” শতাব্দিকাল পূর্ব হইতেই অবিভক্ত বৃটিশ ভারতের প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় সরকারের সকল উচ্চতর পদে ICS or IPS ক্যাডার হইতে কর্মকর্তাগন নিয়োগ ও পদোন্নতি প্রাপ্ত হইতেন।”উল্লেখ্য যে, তাঁরা সকলেই প্রশাসনিক ক্যাডারের সদস্য ছিলেন।

“পাকিস্তান আমলেও প্রায় একই পদ্ধতি বিরাজমান ছিল, উচ্চতর পদের ২/৩ অংশ পদে CSP কর্মকর্তাগন এবং অবশিষ্ট ১/৩ অংশ পদে প্রাদেশিক প্রশাসনিক সার্ভিসের কর্মকর্তাগন নিয়োগ/পদোন্নতি প্রাপ্ত হইতেন।”

রায়ের ৭২ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে “ উল্লেখ্য যে, বৃটিশ বা পাকিস্তান আমলেও বিভিন্ন ক্যাডার ছিল কিন্তু পূর্বেই বিস্তারিত আলোচনা করা হইয়াছেযে প্রাদেশিক বা কেন্দ্রিয় সচিবালয়ে উপসচিব পদ উচ্চতর পদ হিসাবে গন্য হইত এবং উক্ত উপসচিব এবং তদুর্ধ পদগুলিতে সবসময়ই কেন্দ্রিয় ও প্রাদেশিক প্রশাসনিক কর্মকর্তাগন পদোন্নতি পাইতেন।

রাষ্ট্রের তিনটি প্রধান স্তম্ভ বা বিভাগের মধ্যে একটি হইল নির্বাহী বিভাগ, রাষ্ট্রর জাতীয় পরিষদ বা আইনসভা এবং বিচার বিভাগ এবং বিচার বিভাগ এর কার্যক্রম ব্যতিরেকে অন্য সকল প্রকার কার্যের দায়িত্ব নির্বাহী বিভাগের উপর বর্তায়। দেশের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান, তাহার মন্ত্রীগন সমন্বয়ে সম্পূর্ন নির্বাহী বিভাগ গঠিত। প্রতিটি মন্ত্রনালয়ে একজন সচিব/ অতিরিক্ত সচিব থাকেন । তিনি মন্ত্রনালয়ের Principal Accounts কর্মকর্তা এবং প্রধান নির্বাহী।তাহার প্রধান কার্য হইতেছে মাঠ পর্যায়ে সংগৃহীত তথ্য উপাত্তের উপর ভিত্তি করিয়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীকে তার কর্মপন্থা নির্ধারন করতঃ সিদ্ধান্ত লইতে (PolicyDecision) সহায়তা করা, কর্মপন্থা নির্ধারন হইলে মন্ত্রনালয়ের পক্ষ হইতে সেই সিদ্ধান্ত কর্মে পরিনত করিতে তত্ত্বাবধান করিবার দায়িত্ব সচিবের উপর বর্তায। এইরুপ কর্মপন্থা নির্ধারন (PolicyDecision) ও তাহা কার্যে পরিনত করিতে (Executive) সচিবের সহিত যুগ্ম সচিব ও উপসচিব সহায়ক ভুমিকা পালন করেন। এবং নির্বাহী সরকারের নির্বাহী অঙ্গঁ (Executive Arm) হিসাবে পরিচিত।

সাধারন প্রশাসন কার্য ব্যতিরেকে মাঠ পর্যায়ে সরকারের উপরোক্তভাবে গৃহিত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকে বিভিন্ন পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হইতে বিভাগীয় কমিশনার পর্যন্ত সকল কর্মকর্তাগনের উপর, প্রকৃতপক্ষে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন এবং নির্বাহী বিভাগের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সহিত উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিবগন সেতুবন্ধনের মত কাজ করেন। এই কারনেই ব্রিটিশ আমল হইতেই সচিবালয়ের উপসচিব ও তদুর্ধ পদে সব সময়ই প্রশাসনিক কর্মকর্তাগন নিয়োগ ও পদোন্নতি পাইতেন।”

রায়ের ৭৩ নং পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে ‍“যেহেতু PSC এর সুপারিশ পর্যায় হইতেই কর্মকর্তাগন বিভিন্ন ক্যাডারে শ্রেনীভুক্ত হইয়া যায় সেই হেতু সচিবালয়ের প্রশাসনিক উপ-সচিব পদে প্রশাসনিক কর্মকর্তাগন ব্যতিরেকে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাগনের পুনরায় নিয়োগ বা পদোন্নতি প্রাপ্ত হইবার কোন সহজাত অধিকার নাই।”

ভারতীয় উপমহাদেশের প্রশাসন সার্ভিসের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এটা পরিস্কার যে, সচিবালয়ের উচ্চতর পদে প্রশাসন সার্ভিসের বাইরে অন্য কোন বিশেষায়িত সার্ভিসের পদায়নের সুযোগ নাই। পাশাপাশি এটাও পরিস্কার যে, উচ্চতর পদগুলিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল বটে তবে সেটা প্রাদেশিক প্রশাসন সার্ভিসের জন্য । অন্য কোনো বিশেষায়িত বিভাগের জন্য নয়।

পদোন্নতিরর ক্ষেত্রে সমতার নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে মর্মে যে অভিযোগ করা হয়েছিল তার ৭৬ পৃষ্ঠার আদেশে ৩৮ নং পৃষ্ঠা থেকে ৭২ নং পৃষ্ঠা পর্যন্ত দেশ-বিদেশের অনেক মনীষির এতদসংক্রান্ত মন্তব্য পর্যালোচনা করে মহামান্য আদালত বলেন “সকল প্রার্থীগন PSC কর্তৃক অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অবতীর্ন হইবার সমান সুযোগ পান। তৎপর প্রতিযোগিতামুলক পরীক্ষায় তাহাদের নিজ নিজ ফলাফল ও পছন্দের ভিত্তিতে বিভিন্ন ক্যাডারের নিয়োগ প্রাপ্তির সুযোগ পান। লক্ষনীয় যে যদিও সকল প্রার্থী একই পরীক্ষায় অবতীর্ন হইতেছেন কিন্তু পরীক্ষার ফলাফল ও নিজ নিজ পছন্দের কারনে বিভিনা ক্যাডারে পৃথক শ্রেনীভুক্ত হইয়া যাইতেছেন, কিন্তু যেহেতু এই শ্রেনীভুক্তকরন সার্বজনীন পরীক্ষা ও নিজ নিজ পছন্দের কারনে হইতেছে সেই হেতু উক্ত শ্রেনীভুক্তকরন যৌক্তিক এবং ইহার যথাযুক্ত ভিত্তি- নিকষ (rational basis)রহিয়াছে যাহা সংবিধানের ২৯ নং অনুচ্ছেদের শর্ত পূরন করে।”

সংক্ষেপে বলা যায়, মন্রনালয়ে উপসচিব বা তদুর্ধ্ব পদে প্রশাসন ব্যতিত অন্য কোন বিশেষায়িত ক্যাডার কর্মকর্তার পোস্টিং অযৌক্তিক ও অন্যায্য, প্রশাসনিক সকল পদে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পোস্টিংপাওয়া সহজাত অধিকার। উপসচিব পদন্নোতির অন্যান্য ক্যাডারের জন্য ২৫% কোটা বিদ্যমান থাকায় ইহাতে বরঞ্চ ২৫% পদে প্রশাসনিক ক্যাডারের কর্মকর্তাগন পদোন্নতি হইতে বঞ্চিতহইয়াছেন এবং সাংবিধানিক অধিকার equality of oppartunityখর্বহইয়াছে। প্রশাসনে পদোন্নতি বঞ্চনা রোধে তাই বিদ্যমান ব্যবস্থার সংস্কার জরুরী।
রাশেদ ইসলাম: বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে কর্মরত।




ভোলাকে ‘কুইন আইল্যান্ড অব বাংলাদেশ’ ঘোষণা

ভোলা: বাংলাদেশের একমাত্র ব-দ্বীপ ভোলাকে এখন থেকে ‘কুইন আইল্যান্ড অব বাংলাদেশ’ নামে ডাকা হবে।
বুধবার বেলা ১১টায় ভোলা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতি ও মতামতের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছ।
পর্যটন শিল্পের প্রচার ও বিপণনের লক্ষ্যে ভোলা জেলার নিজস্ব ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য স্লোগানসহ লোগো তৈরি সংক্রান্ত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সূত্রমতে, ভোলার আয়তন ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৭২১ বর্গ কিলোমিটার। এর সাতটি উপজেলার মধ্যে চর ফ্যাশন উপজেলা সর্ববৃহৎ (১ লাখ ৪৪ হাজার ৪ বর্গ কিমি)। সবচেয়ে ছোট উপজেলা বোরহানউদ্দিন (২৮ হাজার ৪৬৭ বর্গ কিমি)। এ জেলার জনগোষ্ঠী ২১ লাখ। লোকজনের আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ও মৎস্য খাত। দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে- চর কুকরী-মুকরী, দেউলি, বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্মৃতি জাদুঘর (আলীনগর ইউনিয়ন, ভোলা সদর), মনপুরা দ্বীপ, মনপুরা ফিশারিজ লিমিটেড, ঢাল চর, মনপুরা ল্যান্ডিং স্টেশন।
জেলায় আগত অতিথিদের জন্য জেলা সদরে সার্কিট হাউজ ও বাকি ছয়টি উপজেলায় জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন ছয়টি বাংলো রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে ব্যক্তি মালিকানাধীন হোটেল।
সভায় বিশিষ্টজনরা একেকজন একেক নামের প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবের সমর্থনে যুক্তিও তুলে ধরেন। এর মধ্যে ছিল টক দধির ভূমি, ইলিশ রাজ্য, ইলিশ ভূমি, সুপারি ভূমি, নারকেল ভূমি, পাখির দ্বীপ, তরমুজ ভূমি, স্বর্গের দ্বীপ, প্রকৃতি দ্বীপ, সুপেয় জলের দ্বীপ ও নির্মল বায়ুর দ্বীপসহ বিভিন্ন প্রস্তাব। কিন্তু শেষে ‘কুইন আইল্যান্ড অব বাংলাদেশ’ যা বাংলা করলে ‘বাংলাদেশের দ্বীপের রাণী’ নামটি চূড়ান্ত হয়।
সভার সঞ্চালক জেলা প্রশাসক মো সেলিম রেজা বলেন, বাংলাদেশের একমাত্র ব-দ্বীপ হচ্ছে এই জেলা। এই দ্বীপ হলো বাংলাদেশের কপালে টিপের মতো।
ভোলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘যে নামেই ডাকি না কেন ভোলা সমৃদ্ধ নগরী ও পর্যটনকেন্দ্র তখনই হবে, যখন এ জেলাটি ভাঙন মুক্ত হবে।’







সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ
দ্বৈরথে মুখোমুখি বাংলাদেশ-ভারত

সিলেটে চলমান সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে এ বৃহস্পতিবার টুর্নামেন্টের নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে জয় পেলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বিকেল ৫টায় ম্যাচটি মাঠে গড়াবে। তবে এই ম্যাচের আগে দুই দলই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করেছে।
তবে ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য প্রতিশোধের একটি সুযোগ করে দিয়েছে। কারণ ২০১৩ সালের এই আসরে বাংলাদেশকে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ভারত হারিয়েছিল ২-০ গোলে। তাই এবার নিজেদেরে মাটিত ভারতকে হারিয়ে প্রতিশোধের মোক্ষম সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশকে।
তবে শক্তির বিচারে খানিকটা এগিয়ে সফরকারী দলটি। কারণ প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে ভারত। আর বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে ৪-০ গোলে। গোল গড়ে খানিকটা এগিয়ে ভারত। ফলে এ ম্যাচে ভারত ড্র করলেই তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে। তবে এক্ষেত্রে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে হলে জয়ের কোন বিকল্প নেই লাল-সবুজের জার্সিধারীদের।
বাংলাদেশের কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানী বলেন, 'শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমরা কয়েকটি সহজ গোল মিস করেছি। ফিনিশিংটা আমাদের ভালো হয়নি। তবে ভুলগুলো শুধরে ভারতের বিপক্ষে আরো ভালো করাই আমাদের লক্ষ্য। সব দলের প্রতি সম্মান রয়েছে আমাদের। সবার প্রতি সম্মান রেখেই বলছি,  আমি মনে করি আমরাই ফেভারিট। সামনে যে দলই পড়ুক না কেন আমরা লড়াই করব। ছাড় দেবো না একবিন্দুও।’
তিনি আরো বলেন,‘সিলেটের দর্শকরা পুরোটা সময় আমাদের যে রকম সমর্থন দিয়ে গেছেন, তা অতুলনীয়। তাদের সমর্থনের কারণেই আমরা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এত ভালো খেলতে পেরেছি। ভারতের বিপক্ষেও এ সমর্থন আমাদের কাজে লাগবে।’
বাংলাদেশ অধিনায়ক শাওন হোসেন জানালেন, ‘টুর্নামেন্টে কোনো দলকেই আমরা সহজভাবে নিচ্ছি না। ভারত বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এবং শক্তিশালী দল। তবে আমরা অনেক আত্মবিশ্বাসী। যে কাউকেই হারানো ক্ষমতা রাখি আমরা।’
আর ভারতের কোচ বিথান সিং ম্যাচ সম্পর্কে বলেন, 'প্রতিপক্ষের প্রতি আমাদের সমীহ আছে। কিন্তু আমরা খেলার জন্য প্রস্তুত। সবকিছু ভালোভাবে হয়েছে। দলের সদস্যরা আত্মবিশ্বাসী। দলের কোন খেলোয়াড়ের কথা আলাদাভাবে বলতে চাইনা। সবাই ভালো। প্রতিটি ম্যাচই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সব দলই আমাদের কাছে সমান।'
আর ভারতে অধিনায়ক প্রভুষ্কান সিং গিলি জানালেন,  'লড়াইয়ের জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত। স্বাগতিক দল, দর্শক সমর্থন বাংলাদেশের জন্য বাড়তি সুবিধা।  শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের ম্যাচ দেখেছি। যথেষ্ট শক্তিশালী দল মনে হয়েছে বাংলাদেশকে।'
শুক্রবার টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ডের সর্বশেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে নেপাল। প্রথম রাউন্ড শেষে সরাসরি সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ আগস্ট প্রথম সেমিফাইনাল এবং ১৭ আগস্ট দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ১৮ আগস্ট।





রবিউল হত্যার প্রধান আসামি মিরাজের রিমান্ড নামঞ্জুর

বরগুনার চাঞ্চল্যকর শিশু রবিউল হত্যার প্রধান আসামি মিরাজের রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরাজকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে।
পরে শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রিট বৈজয়ন্তি বিশ্বাস এ আদেশ দেন।
এর আগে মিরাজকে বরগুনা কারাগার থেকে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থিত করা হয়।
মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা ও তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল আখতার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, মামলার বাদী রবিউলের বাবার ধারণা এ হত্যাকাণ্ডে আরো কেউ জড়িত থাকতে পারে। তাই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত তা নামঞ্জুর করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোট আমখোলা গ্রামের দুলাল মৃধার ছেলে রবিউল আউয়ালকে মাছ চুরির অভিযোগে সোমবার (৩ আগস্ট) রাতে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।



‘সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করবেন না’

যুবলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘বিতর্কিত কাজ করবেন না। সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করবেন না। এমন কোনো কর্মকাণ্ড করবেন না, যাতে ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ পেয়ে যায়।’
রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে কাজী বশির মিলনায়তনে আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বুধবার বিকেলে তিনি এ সব কথা বলেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘পাকিস্তানি সেনারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে সাহস পায়নি। ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়েও বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, পাকিস্তান সামরিক জান্তা তাকে হত্যা করতে পারবে না। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের যে, বাঙালির হাতেই জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু নিহত হয়েছেন। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলেরর ষড়যন্ত্রের কারণেই তাকে হত্যার শিকার হতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতাবিরোধী চেতনা ধারণ করে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। জিয়াই প্রথমে রাজাকারদের পুনর্বাসন করছেন। আর তার হাত ধরেই বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি (খালেদা) মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সংগঠন জামায়াতের শক্তির ওপর ভর করে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে চাইছেন। খালেদা জিয়া রাজকার নিজামী-মুজাহিদের হাতে পতাকা দিয়ে আমাদের হাতকড়া পরিয়েছিলেন। ৭১’র পরজাতি শক্তি বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিঃশেষ করতে এখনও তৎপর। এ ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ৭০’র নির্বাচনে আমি বঙ্গবন্ধু সফরসঙ্গী ছিলাম। আমি খুব কাছে থেকে দেখেছি, বাঙালির প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা। একইভাবে বাংলার সাধারণ মানুষও তাকে অসম্ভব ভালোবাসতেন।’
শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের প্রশংসা করে তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে তার কন্যা শেখ হাসিনা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বঙ্গবন্ধু যেমন লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগুতেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’
সভায় বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দিন খান আলমগীর বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যার জিয়াউর রহমানই সবচেয়ে সুবিধা ভোগ করেছিলেন। আর এ থেকেই প্রমাণিত হয় বঙ্গবন্ধুর হত্যার পেছনে জিয়ারও ষড়যন্ত্র ছিল।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান, আব্দুস সাত্তার, মাহবুবুর রহমান হিরন, ফারুক হোসেন প্রমুখ।




পাবনায় বিআরটিএ অফিসে অভিযানে ৫ দালালকে সাজা

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনা বিআরটিএ অফিসে অভিযান চালিয়ে পাঁচ দালালকে আটকের পর বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা খাতুন এ সাজা দেন।
পাবনা সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোমিনুল করিম জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে দুপুর ১২টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পাবনা বিআরটিএ অফিসে অভিযান চালায়। এ সময় আবুল হোসেন (২৯), সমির (২৫), রতন (২৬), শরিফ (২৩), সুইট (২৬) ও জনি (২৭) নামে পাঁচ দালালকে আটক করা হয়। পরে আটকদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত করা হলে আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সালমা খাতুন তাদের প্রত্যেককে চার মাস করে কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহের নিগার, আজগর হোসেন, পিংকি সাহা, ইসমাইল হোসেন ও বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক জামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
রায়ের পর আটকদের পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে এসব দালাল চক্র গ্রাহকদের জিম্মি করে অর্থ আদায় করতো বলে জানান তিনি।




ভাগ্নেকে অপহরণ করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : পার্কে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে জেলার রূপগঞ্জ উপজেলা তারাব পৌরসভার দক্ষিণপাড়া এলাকা থেকে নিজ ভাগ্নে সাব্বির হোসেনকে (৪) অপরহণ করেছেন শাহাদাৎ হোসেন।
সোমবার সকালে ওই শিশুটিকে অপহরণ করার পর তার পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার দুপুরে এই অভিযোগ এনে শিশুটির মা স্মৃতি বেগম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা করেছেন।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল ইসলাম দ্য রিপোর্টকে জানান, এ ঘটানায় শিশুর মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। শিশুটি উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চলছে।





‘কাগজের ফুল’ ঠিক কতদূর?
জুয়েইরিযাহ মউ, শিল্প ও বিনোদন প্রতিবেদক

323

ঢাকা: কাগজের ফুল! এই ফুলের স্বপ্ন মাথায় নিয়েই যেন চলে গেলেন নির্মাতা তারেক মাসুদ। কাছের মানুষেরা বলেন তারেক মাসুদ ছিলেন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। কোনদিন তাঁর স্বপ্ন ফেরির অভ্যেস থামেনি, থেমে যেতে জানতেনই না তিনি। প্রথম ‘কাগজের ফুল’ নিয়ে সহকর্মীদের সাথে বসেছিলেন ২০০৭ সালে, ২০০৮ সালে প্রথম বারের মতোন শ্যুটিং এর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু যেহেতু অনেক বড় আয়োজনের পরিকল্পনা মাথায় নিয়েই নেমেছিলেন এ যুদ্ধে। তাই বারংবার যুদ্ধক্ষেত্র প্রস্তুত হয়ে উঠছে না দেখেই প্রতীক্ষা করেছেন প্রস্তুতির। ধীরে ধীরে সময়কে গুছিয়ে নিয়েছেন নিজের মতো করে।

জানা যায়, কলকাতায় তিনি ফ্ল্যাট নিয়ে থেকেছেন, দেখেছেন ঘুরে ফিরে আর কেবল ভেবেছেন এই চলচ্চিত্র নিয়ে। অন্যান্য কাজগুলোতে জড়িয়ে গেছেন ঠিকই তবু সরে দাঁড়ান নি ‘কাগজের ফুল’ এর পরিকল্পনা থেকে। এর মধ্যেই ২০১০ সালে মুক্তি পায় ‘রানওয়ে’।
kagojer_0118

দল গঠন করা, শ্যুটিং এর পরিকল্পনায় পরিবর্তন এসমস্তকিছুর মধ্যে বার বার নতুন করে শুরুও করতে হয়েছে তাঁকে। এর মধ্যে ২০১১তে তিনি নতুন করে আবার ভাবতে শুরু করেছিলেন ‘কাগজের ফুল’ নিয়ে। এই চলচ্চিত্রের জন্য মনমতো লোকেশন দেখতেই তিনি ছুটে গিয়েছিলেন সহযোদ্ধা মিশুক মুনীরকে সাথে নিয়ে। মিশুক মুনীর, ক্যামেরার পেছনের এই খ্যাতিমান মানুষটির তারেক মাসুদের অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলোর মতোই তাঁর সাথে ‘কাগজের ফুল’ চলচ্চিত্রেও কাজ করার কথা ছিল।
১৩ই আগস্ট ২০১১ তে, চার বছর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুড়ির কাছে জোকা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কাছে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর দু’জনেই চলে যান আমাদের ছেড়ে। সেদিন এই চলচ্চিত্রের লোকেশন দেখেই তাঁরা ফিরছিলেন।

পরবর্তীতে কোথায় দাঁড়িয়ে আছে আজ ‘কাগজের ফুল’? এ প্রশ্নের উত্তর আমরা জানতে চেয়েছিলাম ‘কাগজের ফুল’ চলচ্চিত্রের সাথে জড়িত এসময়ের তরুণ নির্মাতা প্রসূন রহমান এর কাছে। তিনি বলেন – ‘বার বার শুরু করে থেমে গিয়ে পুনরায় শুরু করেছেন তারেক ভাই এ ছবির কাজ। আমি ২০০৭ এ ইন্টার্ন হিসেবে ঢুকি, তখন এ ছবির কাজ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাঝে অন্যান্য কাজ হতে থাকে। ২০০৮ এ আমি দেশের বাইরে গিয়ে ফিরে এসে আবার জয়েন করি, আমরা এরপর ‘নরসুন্দর’ এবং ‘রানওয়ে’ করি। সর্বশেষ ২০১১তে তারেক ভাই নতুন উদ্যমে আবার উদ্যোগ নিলেন। কিন্তু তারপর তো আর চলেই গেলেন তিনি। ২০১৩ সালে সরকার বিশেষভাবে ‘কাগজের ফুল’ কে সরকারী অনুদান দিয়েছে। এখন ক্যাথরিন মাসুদ নতুন করেই আবার শুরু করবেন। আমরা সবাই ভাবছি এ নিয়ে, বসাও হচ্ছে, কথাও হচ্ছে। আসলে এটা বিশাল আয়োজনের ব্যাপার। ক্যাথরিন প্রায়ই বলেন ‘আমাদের সব ফুলগুলোর মধ্যে এ ফুলটা সবচে বড় তো তাই সময়ও বেশি লাগছে, অসুবিধা নেই।’।

ব্যাপারটা আদতে সেরকমই। টিম কিংবা অভিনেতা-অভিনেত্রী সব নতুন করে ভাবতে হবে, যে চরিত্রে আগে যাকে ভাবা হয়েছিল এখন আর তাঁদের রাখা যাবে কি না সেটাও তো একটা কথা। ৪-৫ বছর তো কম সময় না। ছোট ছোট কাজগুলো চলছে। ‘ফেরা’ প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটি করা হল। ক্যাথরিন মাসুদ প্রযোজিত এ চলচ্চিত্রটি আমি পরিচালনা করি। আর্কাইভের কাজও করছে তারেক মাসুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট।

Comments

  1. As a Novice, I m always searching on the web for content articles that can help me. However do you know how come i cant see all the pics on your webpage?
    This is a huge sum.
    Ive realised a whole lot from reading through this post and I hope that I can catch up on other these kinds of posts soon.
    obst und gemüsereiniger

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

মনীষীদের বাণী- উক্তি

পেপ্যাল ভেরীফাই হয়নি তাই বলে কি ডোমেইন-হোস্টিং কেনা বন্ধ থাকবে? জানুন আনভেরীফায়েড পেপ্যাল দিয়ে ডোমেইন ও হোস্টিং কেনা যায় কোথা থেকে

বিসিএস পছন্দর ক্ষেত্রে প্রথম প্রশাসন কেন? দেখুন কোন ক্যাডারের পদোন্নতি কেমনভাবে হয় বা কোথায় থেকে কোথায় পোস্টিং